কিভাবে কাজ করে ফেস অ্যাপ
Posted by Mahmudul Hasan Moon
অলরেডি অনেকে আমার লেখা গুলো না পরেই আমার পোস্ট এর ছবি দেখে হা হা রিয়্যাক্ট দিয়ে দিয়েছেন। তাদের প্রতি সমবেদনা প্রকাশ করছি, কারণ আমার এই পোস্ট এর উদ্দেশ্য আপনাদের হাসান নয়। কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য আপনাদের সাথে শেয়ার করা।
আমার যে ছবিটি দেখে অনেকে মজা পাচ্ছেন অথবা অবাক হচ্ছেন, সেটা একটা অ্যাপস দিয়ে বানানো। আমি জাস্ট আমার ছবিটি ইম্পোর্ট করে কিছু অপশন চেঞ্জ করেছি, তাতেই আমার ফিমেল ভার্সন দেখা যাচ্ছে। এর সাথে আমাকে বৃদ্ধ বয়সে কেমন দেখাবে সেটা দেখারও অপশন আছে। কিছুদিন আগে আমার মেধাবী বন্ধুর ছবিটির ফিমেল ভার্সন তৈরি করে তার সাথে মজা নিয়েছিলাম। কিন্তু আমার বন্ধুর বিচক্ষণতা দেখে আমি অবাক হয়েছি। আমার বন্ধু আমাকে প্রশ্ন করল, তুই তো এটা ফেস অ্যাপ দিয়ে বানাইছিস, বল তো কি ভাবে ফেসঅ্যাপ কাজ করে। সেই মূহুর্তে আমি চুপ হয়ে গেছি ২ টা কারণে, ১। আমার উচিৎ ছিল এই ফেসঅ্যাপ মেকানিজম জানা, আর ২। আমার বন্ধু ভাবনা, চিন্তা দেখে। তাই আমিও চেষ্টা করলাম এই বিষয়ে কিছু জানার। আর আমি একা জানব কেন, তাই আপনাদের উদ্দেশ্যে আমি আমার জানা গুলো শেয়ার করলাম। আশা করি আপনাদের ভালো লাগবে।
আমরা কিন্তু অনেক অ্যাপস দেখেছি যেগুলো ব্যবহার করে ফেস চেঞ্জ করা যায়। কিন্তু সব থেকে ভালো পারফরম্যান্স কিন্তু ফেসঅ্যাপ এর। ইন্সট্রাগ্রাম, স্নাপচ্যাট সহ বাকী অ্যাপস গুলোতে ইন্টারনেট আবশ্যক নয়। কিন্তু ফেসঅ্যাপ এ অবশ্যই ইন্টারনেট লাগবে। আবার দেখি কি মেকানিজম কাজ করে ফেসঅ্যাপ এর পিছনে। এটি নির্মাণ করে রাশিয়ান একটি প্রতিষ্ঠান, তারা কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা এবং মেশিন লারনিং ব্যবহার করেছে এর পিছনে। কোন এলগরিদম ব্যবহার করা হয়েছে সেটা আমার পরের পোস্ট এ আলোচনা করব। এখন শুধু হালকা একটা ধারণা নিয়ে নেই। মেশিন লারনিং এর মাধ্যমে একটা মডেল বানানো হয়েছে, যেটার সাহায্যে আমাদের ছবিগুলোর চেঞ্জ করে ফেসঅ্যাপ। অনেকের কাছে মেশিন লারনিং ব্যপারটি নতুন, তাদের জন্য আমার কিছু কথা, মেশিন লারনিং হল মেশিনকে শিখানো, ছোট বাচ্চাদের যেমন আমরা ধীরে ধীরে অনেক কিছু দেখাই, আর তারা শিখে, তেমনি কম্পিউটার প্রোগ্রামও শিখতে পারে। এই শিখানোর পদ্ধতিকে বলে মেশিন লারনিং। ফেসঅ্যাপ এ কি করা হয়েছে জানেন। মেশিন কে কিছু ইয়াং ছবি এবং সেই ছবির বৃদ্ধ ভার্সন দেখানো হয়েছে। কিছু ছবির ছেলে ভার্সন আর মেয়ে ভার্সন দেখানো হয়েছে। মেশিন কে শিখানো হয়েছে যে, এই রকম চেহারা থাকলে তার মেয়েভার্সন এমন হবে। এবং এই ইয়াং চেহারা থাকলে তার বৃদ্ধ ভার্সন এমন হবে। অনেক গুলো ছবি থেকে মেশিন শিখে আর তাদের মধ্যকার প্যাটার্ন খুজে নেয়। এই ভাবে মেশিন তার অভিজ্ঞতা অর্জন করে। এই অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগিয়ে মেশিনে যে নতুন ছবি দেওয়া হয়, মেশিন বা কম্পিউটার তাকে বিভিন্ন ছবিতে পরিবর্তন করে। আমি বললাম না ফেসঅ্যাপ এ ইন্টারনেট লাগে। এর কারণ মেশিনের এই ছবিগুলো চেঞ্জ করতে অনেক বেশি প্রসেসিং ইউনিট দরকার৷ আমাদের ফোনে বা কম্পিউটার এ এত প্রোসেসিং স্পীড নাই। তাই আমাদের আপলোড দেওয়া ছবি মেইন সার্ভারে চলে যায়, সেখানে রাখা হাই প্রোসেসিং স্পীড কম্পিউটার এ ছবিটি পরিবর্তন হয়ে আমাদের ফোনে বা কম্পিউটার এ আসে। আমরা পাই নতুন একটা ছবি।
যাহারা ব্যাপার টা জানেন তাদের কাছে আমার পোস্ট টি গুরুত্বপূর্ণ মনে নাও হতে পারে। পরের পোস্ট এ আমি সেই এলগরিদম টি নিয়ে আলোচনা করার চেষ্টা করব। সবাই ভালো থাকবেন। আপনাদের অভিজ্ঞতা শেয়ার করুন, আমরাও অনেক কিছু জানতে পারব।
লেখকঃ মাহমুদুল হাসান মুন
কম্পিউটার সায়েন্স এন্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগ
হাজী মোহাম্মদ দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, দিনাজপুর ।
Go back to all posts
Make a comment
Comments

Fahad. 2 days ago
Great Job

Mahmudul Hasan Moon Admin 2 days ago
Thanks